পরম করুণাময় আল্লাহর নামে শুরু করলাম
১. বলুন, তিনি আল্লাহ, এক, ২. আল্লাহ অমুখাপেী, ৩. তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি, ৪. এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।
তিরমিযী ও হাকেম প্রমুখের রেওয়ায়েতে আছে, মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ সা. কে আল্লাহ তাআলার বংশ পরিচয় জিজ্ঞেস করেছিল, যার জওয়াবে এ সূরা নাজিল হয়। অন্য এক রেওয়ায়েতে আছে যে, মদীনার ইহুদীরা এ প্রশ্ন করেছিল। এ কারণে যাহহাক রহ. প্রমুখ তাফসীরবিদের মতে সূরাটি মদীনায় অবতীর্ণ। (কুরতুবী)
‘বলুন, তিনি আল্লাহ, একÑএখানে ‘বলুন’ কথার মধ্যে রাসূলুল্লাহ সা. এর রেসালতের প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। এতে আল্লাহর প থেকে মানুষকে পথপ্রদর্শনের আদেশ রয়েছে। আল্লাহ শব্দটি এমন এক সত্তার নাম, যিনি চিরকাল আছেন এবং চিরকাল থাকবেন। তিনি সর্বগুণের আধার ও সর্বদোষ থেকে পবিত্র। আহাদ ও ওয়াহেদ উভয়ের অর্থ এক। কিন্তু আহাদ শব্দের অর্থে এটাও শামিল যে, তিনি কোন এক অথবা একাধিক উপাদান দ্বারা তৈরি নন, তাঁর মধ্যে একাধিকত্বের কোনো সম্ভাবনা নেই এবং তিনি কারও তুল্য নন। এটা তাদের সেই প্রশ্নের জবাব, যাতে বলা হয়েছিল, আল্লাহ কিসের তৈরি? এই সংপ্তি বাক্যে সত্তা ও গুণাবলী সম্পর্কিত সকল আলোচনা এসে গেছে এবং ‘কুল’ শব্দের মধ্যে নবুওয়াতের কথা এসে গেছে। অথচ এসব আলোচনা বিরাটকায় পুস্তকে লিপিবদ্ধ করা হয়।
‘আল্লাহ অমুখাপেী’Ñএখানে ছামাদ শব্দের অর্থ সম্পর্কে তাফসীরবিদগণের অনেক উক্তি আছে। তিবরানী এসব উক্তি উদ্ধৃত করে বলেন, এগুলো সবই নির্ভুল। এতে আমাদের পালনকর্তার গুণাবলীই ব্যক্ত হয়েছে। কিন্তু ছামাদ এর আসল অর্থ সেই সত্তা, যাঁর কাছে মানুষ আপন অভাব ও প্রয়োজন পেশ করে এবং যাঁর সমান মহান কেউ নয়। সারকথা এই যে, সবাই তাঁর মুখাপেী, তিনি কারো মুখাপেী নন। (ইবনে কাসীর)
হযরত আবু হোরায়রা রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, তোমরা সবাই একত্রিত হয়ে যাও। আমি তোমাদেরকে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ শুনাব। অতঃপর যাদের পে সম্ভব ছিল, তারা একত্রিত হয়ে গেলে তিনি আগমন করলেন এবং সূরা ইখলাস পাঠ করে শুনালেন। তিনি আরও বললেন, এই সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান। (মুসলিম, তিরমিযী) আবু দাউদ, তিরমিযী ও নাসায়ীর এক দীর্ঘ রেওয়ায়েতে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করে তা তাকে বালা-মুসীবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট হয়। (ইবনে কাসীর) ওকবা ইবনে আমের রা. এর রেওয়ায়েতে রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, আমি তোমাদেরকে এমন তিনটি সূরা বলছি যা তওরাত, ইঞ্জীল, যবুর ও কুরআনসহ সব কিতাবেই রয়েছে। রাত্রিতে তোমরা ততণ নিদ্রা যেয়োনা, যতণ সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস না পাঠ কর। ওকবা রা. বলেন, সেদিন থেকে আমি কখনও এই আমল ছাড়িনি। (ইবনে কাসীর)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন