মঙ্গলবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১২

কোরবানির ঈদে নারীদের প্রস্ততি নাফিসা ইসলাম

ঈদ মানেই আনন্দ! আর এ আনন্দ পুরোপুরি উপভোগ করতে চাই পূর্ব প্রস্তুতি। আসছে কোরবানির ঈদ। আর কোরবানির ঈদে যেহেতু খাওয়া-দাওয়া ও অতিথি আপ্যায়নের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়ে থাকে, তাই এই ঈদের প্রস্তুতিটাও অন্যরকম। কেমন হবে এ ঈদের প্রস্তুতি এ বিষয়ে বিশিষ্ট রন্ধন ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ড. সিদ্দিকা কবিরের পরামর্শ ।
অন্য সব উৎসবের সাজগোজ, বেড়ানো ও জামা কাপড় কেনাকাটা প্রাধান্য পেলেও ঈদুল আজহা উৎসবে বেশি প্রাধান্য পায় খাবার। এ ঈদের দিনে বাড়ির কর্তা থেকে গৃহিণী পর্যন্ত সবাই নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন এবং এ ব্যস্ততার পুরোটাই খাবার নিয়ে। বিশেষ করে কোরবানির গোসত নিয়ে। তাই ঈদের আগেই যদি ঈদের দিনের খাবারের পরিকল্পনা করে নিয়ে সে অনুযায়ী কিছু খাবার আগেই তৈরি করা যায় তবে ব্যস্ততার কারণে অতিথি আপ্যায়নে এবং নিজের পরিবারের খাবারের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা যাবে।
আপনি আগের দিনই মেন্যু তৈরি করে ফেলতে পারেন কি কি খাবার তৈরি করবেন। সে অনুযায়ী কিছু খাবার বিশেষ করে সেসব খাবার যা রেফ্রিজারেটরে রাখা যায় তা রান্না করে রেখে দিতে পারেনÑ সেমাই, পায়েস, ফিরনি এগুলো আগের রাতে রান্না করে ফ্রিজে সংরণ করলে কাজ এগিয়ে থাকে। এছাড়া যেসব খাবার তৈরির আগে মেরিনেট করে রাখতে হয় তা করে রাখতে পারেন।ঈদের দিনের খাবারের তালিকা তৈরিতে খেয়াল রাখবেন আপনার বাসায় কি কি ধরনের অতিথি আসতে পারে এবং আপনার পরিবারের সদস্যরা কি ধরনের খাবার খেতে পছন্দ করে তাদের কথা এবং শিশুদের কথা ভেবে আপনি শুধু গরুর গোসতর আইটেম না করে এর পাশাপাশি মুরগির কিছু আইটেম এবং ঝাল ছাড়া কোরমা, রেজালা টাইপ কিছু আইটেম ও মাছের আইটেমও রাখতে পারেন।
গৃহিণীকেই ভাবতে হয় খাবার টেবিলে সকাল থেকে রাতের খাবারে কি কি তৈরি করতে হবে। এ সময় খেয়াল রাখতে হবে ঈদের সকালে নাস্তা অনেকটাই পরিবারভিত্তিক হয়। তবে ঈদের দিনের খাবার যেন একটু উৎসবমুখর হয় সেজন্য রুটি না করে আপনি তেল ছাড়া পরাটা বা নান করতে পারেন। অনেকে কোরবানির গোসত দিয়েই নাস্তা করতে পছন্দ করেন। সে েেত্র এগুলো ভালো লাগবে। আর ঈদের সেমাই পায়েস তো থাকবেই এর পাশাপাশি যদি একটা ফলের সালাদ তৈরি করে রাখেন তবে ফল খাওয়াটাও হয়ে গেল।
ঈদে পোলাও, কোরমা, কালিয়ার জুড়ি নেই। আর খিচুড়ি গোসত ছাড়া তো এ ঈদে ভাবাই যায় না। তাই আপনি খিচুড়িটা সকাল সকালই তৈরি করে ফেললে গোসত ঘরে এলেই রান্না করে দুপুরের খাবারটা টেবিলে দিয়ে দিতে পারেন। অতিথি এ দিনে রাতেই বেশি আসে। তাই আপনি রাতের খাবারটা একটু ভিন্নতা আনতে পারেন। দুপুরের মেন্যুতে সাদা পোলাও ও সাদা ভাত রেখে রাতের মেন্যুতে বিরিয়ানি রাখতে পারেন। দু’বেলাই আপনি ভেজিটেবল সালাদ রাখবেন। কেননা সব গোসত’র আইটেম হলে পাশাপাশি সবজিও খেতে হবে। অনেকের অনেক ধরনের অসুস্থতা বা ভিন্ন ধর্মের অতিথি এসব মাথায় রেখে আপনি মুরগি এবং মাছের আইটেমও করতে পারেন। এতে করে মাছ, গোসত ও সবজি সবই এসে পড়বে খাদ্য তালিকায়। পাশাপাশি হজমের কথা চিন্তা করে আপনি কোমল কোনও পানীয় না রেখে ঘরে তৈরি বোরহানি রাখতে পারেন, যা কিনা সহজেই হজমে সাহায্য করে এবং দইও রাখতে পারেন।
দুপুরেই সন্ধ্যা ও রাতের জন্য গোসতে মশলা মাখিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। কাবাবের আইটেমটার জন্য টাটকা গোসতই ভালো। তাই কোফতা, কাবাব করে ফ্রিজে রেখে দিন। এতে করে বিকালে এগুলো ভাজতেও সুবিধা হবে এবং গরম গরম পরিবেশনও করতে পারবেন, এসবের পাশে আপনি বিকাল ও রাতের খাবারে দই বড়া, চটপটি, হালিম, কাস্টার্ড, পুডিংও তৈরি করে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে পারেন। সারাদিন গোসত নিয়ে নাড়াচাড়ার পর একটু টক, ঝাল খাবার স্বাদে বৈচিত্র্য আনতে পারবে।
খাবার তৈরির পাশাপাশি খাবার পরিবেশন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারটাও গৃহিণীর মাথায় রাখতে হবে। টেবিলে শুধু খাবারই না টেবিল ডেকোরেশনের জন্য আপনি সবজি দিয়েই নানা রকম ফুল, পাতা, তৈরি করে সাজিয়ে উৎসবের ভাবটা ফুটিয়ে তুলতে পারেন।
টেবিলের খাদ্য তালিকা, ডেকোরেশন সবই যেন ঈদ উৎসবের বার্তা বহন করে।
নিজেকে অতিথি হিসেবে চিন্তা করেও কিছুটা প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারেন। আপনি যখন কারও অতিথি হয়ে যাবেন তখন আপনিও খাদ্য তালিকার কথাটা মাথায় রেখে হজম উপযোগী ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারটা খাবেন। গোসত’র পাশাপাশি সবজি ও মাছটাও খেয়ে নেবেন।
আরও কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরিÑ
খিাবার নিয়ে কাউকে খুব বেশি জোর করা ঠিক নয়। যার যেটুকু প্রয়োজন নিয়ে খাওয়াই ভালো।
শিারীরিক অসুস্থতা থাকলে চিকিৎসকের সঙ্গে আগেই পরামর্শ করুন। বেশি গরুর গোসত স্বাস্থ্যের জন্য তিকর হলে বিষয়টি মাথায় রাখুন।
* ঈদের মেন্যু পরিকল্পনা করার আগে পরিবারের সব সদস্যের কথা মাথায় রাখুন। অল্প বয়সীরা কাবাব খেতে পছন্দ করলেও বয়স্কদের জন্য হালকা মশলায় একটা আইটেম করে রাখা ভালো।
* গিরুর মাংস যার জন্য নিষিদ্ধ তার জন্য মনে করে বিকল্প একটা আইটেম করে রাখতে হবে।
* কোরবানি ঈদের দু-তিনি দিন আগে থেকে পরিকল্পনা নিয়ে কাজে এগুলে সবদিক গুছিয়ে কম পরিশ্রম, সব টাটকা গোসত’র খাবার দিয়ে এবং সুপরিকল্পিত খাবার টেবিলে অতিথি আপ্যায়ন করা যাবে এবং উৎসবটাও আনন্দমুখর হয়ে উঠবে।
গোসত সংরণ করবেন কীভাবে
কোরবানি ঈদের উৎসব-আনন্দ ভিন্ন ধরনের। এ দিনটিতে গোসত নিয়ে মহাব্যস্ত থাকতে হয় পরিবারের সবাইকে। গোসত এমন খাদ্য যা বেশিণ ফেলে রাখা যায় না। সময়মতো সামলাতে হয়। কোরবানির এত গোসত কীভাবে সংরণ করা যায় তা নিয়ে হিমশিম খেতে হয় বাড়ির গৃহিণীকে।
আধুনিক যুগে, রেফ্রিজারেটরও ডিপ ফ্রিজে গোসত রেখে কিছুটা নিশ্চিন্ত হওয়া যায়। তবে রাখার সময় খেয়াল রাখতে পলিব্যাগে প্রথমে পাতলা করে ১ ব্যাগ ঢুকিয়ে ৩০ মিনিট পরে আবার আরেক ব্যাগ এভাবে ঢুকালে গোসত দ্রুত ঠাণ্ডা হয়ে জমবে এবং ফ্রিজেরও কোন তি হবে না। অন্যথায় গোসত জমতে দেরি হলে স্বাদের পার্থক্য এসে যায়।
যখন ডিপ ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেটর ছিল না তখনও আমাদের দেশে গোসত সংরতি হতো। যাদের রেফ্রিজারেটর নেই তারা বা জায়গা হচ্ছে না সে গোসতও সংরণ করা যায়। তেলে আদা, রসুন বাটা, তেজপাতা ও লবণ দিয়ে জ্বাল দিতে হবে। গোসত জ্বাল দিয়ে সিদ্ধ হলে শীতের দিনে একদিন পরপর এবং গরমের দিনে প্রতিদিন একবার জ্বাল দিতে হবে। এভাবে একমাস গোসত সংরণ করা যায়। আবার অনেকে গোসত রোদে শুকিয়েও সংরণ করেন। প্রতিটি সংরণ পদ্ধতিতে স্বাদ ভিন্ন হয়।
ইলেকট্রিক কিমার মেশিনে এখন অতি অল্প সময়ে অনেক কিমা করা যায়। কিমা ছোট ছোট প্যাকেট করে ফ্রিজে সংরণ করে রাখা যায় ঈদের দিনই। টাটকা কিমা দিয়ে কোপ্তা, কাবাব, বার্গারের শেপ তৈরি করতে হয়। তাই ঈদের দিনই বিভিন্ন রেসিপি অনুযায়ী মশলা ব্যবহারে বিভিন্ন খাবার তৈরি করা যাবে। যেমনÑ
* সল্টেড বিফ লেবুর রস, সয়াসস ও লবণ দিয়ে কেঁচে ফ্রিজে ৭দিন পর্যন্ত রাখা যাবে।
* কোপ্তার জন্য কিমার মধ্যে মশলা মাখিয়ে ফ্রিজে রেখে দেয়া যাবে। এভাবে মিটবলও তৈরি করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিলে অনেক দিন রাখা যায়।
* শামি কাবাব বা জালি কাবাব তৈরিতে গোসতর কিমার সঙ্গে যদি সব উপকরণ দিয়ে মাখিয়ে কাবাব বানিয়ে ডিমে চুবিয়ে ও বিস্কুটে গড়িয়ে বক্সে রাখা যায় তবে অতিথি আপ্যায়নে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন এ কাবাব ব্যবহার করা যায়।
 শিক কাবাব, কাঠি কাবাব, মুঠো কাবাব সবই টাটকা গোসত দিয়ে করতে হয়। গোসতর সঙ্গে সব উপকরণ মিশিয়ে ২-৩ দিন ফ্রিজে রাখা যায়।
 বার্গারও সব উপকরণ মিশিয়ে শেপ করে মাঝে পাস্টিকের কাগজ বিছিয়ে একটার উপর একটা রেখে ঢাকনা দেয়া পাত্রে ডিপ ফ্রিজে ১৫-২০ দিন পর্যন্ত রাখা যায়।
গিরুর কলিজা সিদ্ধ করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিলে অনেক দিন রাখা যায়।
গোসত কিউব করে কেটে পরিমাণমতো হলুদ, লবণ, মরিচ, আদা, রসুন বাটা, গরম মশলা ও তেল দিয়ে সিদ্ধ করে সামান্য পানি থাকা অবস্থায় নামিয়ে বক্সে করে ফ্রিজে রেখে দিলে অনেক দিন থাকবে। এ গোসত বিরানি, মাদ্রাজি বিফ, কোরমা করতে কাজে লাগবে।
এছাড়া ঈদের দিন গোসত বেশি করে রান্না করলে তা প্রতিদিন জ্বাল দিতে দিতে ঝরঝরা হলে তা যদি বক্সে ভরে রেখে দিতে পারে তবে তা পরবর্তিতে রুটি বা মুড়ি দিয়ে খেলে ঈদের আনন্দের স্বাদ পাবেন।
গরু জবাইয়ের পর যদি গরুর নির্দিষ্ট কিছু অঙ্গের গোসত যেমন হাড়ছাড়া গোসতর বড় টুকরা, গরুর চুড়, মাথার মগজ, গরুর ভুড়ি এগুলো আলাদা করে আনা যায় তবে আলাদা আলাদা ভাবে ফ্রিজে সংরণ করলে পরে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করে ঈদের আমেজকে দীর্ঘায়িত করা যায়।


ঈদে খাসি-মুরগি

এই ঈদে যদিও গরুর গোসত রান্না হয় বেশি। অনেকেই আবার গরুর গোসত খান না। তাদের জন্য করতে হয় খাসি, মুরগির আইটেম। রেসিপি দিয়েছেন রেজওয়ানা আহমেদ সোনিয়া
খাসির স্পাইসি কাঠি কাবাব
যা লাগবে : খাসির কিমা ১/২ কেজি, পেঁপে বাটা ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১/২ কাপ, আদা বাটা ১ চা চামচ, গরম মশলা বাটা ১ চা চামচ, লেবুর রস ১ চা চামচ, কাবাব মশলা ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, গোলমরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, কাঁচামরিচ কুচি ২ চা চামচ, সয়াসস ১ টেবিল চামচ, টমেটো কেচাপ ২ টেবিল চামচ, দুধ ৪ টেবিল চামচ, পাউরুটি ২ টুকরা, তেল ভাজার জন্য।
যেভাবে করবেন : দুধে পাউরুটি ভিজিয়ে নিন। কিমার সঙ্গে সব মশলা ভালো করে মাখিয়ে এতে ভেজানো পাউরুটি মিশিয়ে আরও কিছুণ মেখে ১ ঘণ্টা মেরিনেট করুন। এবার কাঠিতে মুঠি মুঠি করে মাখান কিমা গেঁথে তেল গরম করে কাবাবের কাঠিগুলো দুই পাশ ভেজে তুলুন। পরটা বা নান রুটির সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন। মজাদার স্পাইসি খাসির কাঠি কাবাব।
মুরগির শাহী রোস্ট
যা লাগবে : আস্ত মুরগি ১টা, পেঁয়াজ বাটা ১ কাপ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, পোস্ত বাটা ১ টেবিল চামচ, জায়ফল-জয়ত্রী বাটা ১/২ চা চামচ, এলাচ, দারুচিনি ২ টুকরা, রোজমেরি বাটা ১/২ চা চামচ, গোলাপের পাপড়ি ১ চা চামচ, কাজু বাদাম-পেস্তা-কিশমিশ বাটা ২ টেবিল চামচ, টকদই ১ কাপ, মিষ্টি দই ১/৪ কাপ, ক্রিম ২ টেবিল চামচ, পাপড়িকা ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, পেঁপেঁ বাটা ১ চা চামচ, বেরেস্তা ১ কাপ, ঘি ১/৪ কাপ, লবণ স্বাদমতো।
যেভাবে করবেন : সব মশলা দিয়ে মেখে মুরগি মেরিনেট করুন ১ ঘণ্টা, মশলা থেকে তুলে মুরগিটা ভেজে তুলুন, পাত্রে ঘি দিয়ে এতে মশলা দিয়ে কষিয়ে ভাজা মুরগি দমে রান্না করুন। মাংস সিদ্ধ হয়ে গেলে বেরেস্তা ও কাঁচামরিচ দিয়ে আরও ৫ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে কাজু ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
শাহী মাটন রেজালা
যা লাগবে : গোসত ১ কেজি, জায়ফল বাটা ১/৪ চা চামচ, পোস্তাদানা বাটা ৪ টেবিল চামচ, শাহী জিরা বাটা ১/২ চা চামচ, আদা বাটা ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১ কাপ, দই ২ টেবিল চামচ, ক্রিম ২ টেবিল চামচ, এলাচ-দারুচিনি ২ টুকরা, লবণ স্বাদমতো, বেরেস্তা ১ কাপ, ঘি ৩ টেবিল চামচ, তেল ৩ টেবিল চামচ, শুকনামরিচ ৬-৭টি।
যেভাবে করবেন : গোসতর সঙ্গে দই, পোস্তা বাটা, পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা, লবণ দিয়ে মেখে রাখুন ১ ঘণ্টা। পাত্রে ঘি ও তেল দিয়ে এতে শুকনামরিচ, দারুচিনি, এলাচ, ফোড়ন দিয়ে মাখন মাংস দিয়ে কষিয়ে নিন, মাংস কষান হলে সিদ্ধ হওয়ার জন্য গরম পানি দিন, মাংস ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে মাখা মাখা হয়ে এলে এতে অর্ধেক বেরেস্তা ও জায়ফল গুঁড়া দিয়ে ১৫-২০ মিনিট দমে রেখে ক্রিম দিয়ে নামিয়ে বেরেস্তা, কাঁচামরিচ দিয়ে পরিবেশন করুন।
বাহারি বিরিয়ানি
ঈদে বিরিয়ানি না হলে কি চলে? তাই বলে প্রতিবছর এক রকম? স্বাদে বৈচিত্র্য আনতে এবার চেষ্টা করতে পারেন একটু ভিন্নস্বাদের রান্না। রেসিপি দিয়েছেন ঝর্ণা জামান
শাহী মোরগ পোলাও
যা লাগবে : পোলাওর চাল আধা কেজি, মুরগি বড় টুকরা এক কেজি, আদা ও রসুন বাটা ২ চা চামচ, গরম মশলা ৪-৫ টুকরা, ঘি এক কাপ, টকদই এক কাপ, জয়ত্রী, জায়ফল বাটা আধা চা চামচ, বেরেস্তা, কাঁচামরিচ, ঘন দুধ আধা কাপ, বাদাম কুচি, লবণ ও পানি পরিমাণমতো।
যেভাবে করবেন : টকদই, লবণ দিয়ে মুরগি মেরিনেট করে এক ঘণ্টা রেখে ঘি, আদা-রসুন জয়ত্রী, জায়ফল বাটা, লবণ, গরম মশলা দিয়ে রান্না করুন। তেল উপরে উঠলে নামিয়ে মাংস তুলে রেখে অন্য পাত্রে বাকি ঘি দিয়ে পোলাওর চাল ভেজে তাতে মাংসের ঝোল ও গরম মশলা, লবণ দিয়ে ভেজে পানি ও দুধ দিয়ে ঢেকে দিন। চাল সিদ্ধ হয়ে গেলে মুরগির মাংস দিয়ে হালকা নেড়ে দমে রাখুন ৫ মিনিট। ঢাকনা খুলে কাঁচামরিচ, বাদাম, বেরেস্তা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
ফ্রাইড রাইস
যা লাগবে : পোলাওর চাল এক কেজি, ডিম ২টা, গাঁজর কুচি, বরবটি, পেঁপে কুচি, আলু কুচি, চিকেন ¯াইস এক কাপ, কাঁচামরিচ, সয়াসস, বাটার, চিনি এক চা চামচ।
যেভাবে করবেন : চাল ধুয়ে ভিজিয়ে পানি ঝরিয়ে লবণ-পানিতে ভাত রান্না করে নিন।
এবার পাত্রে বাটার দিয়ে তাতে ডিম ভেজে তুলে রেখে বাকি সব উপকরণ মৃদু আঁচে রান্না করুন। এবার ভাত দিয়ে বেশি আঁচে রান্না করুন। ভালোভাবে সব মিশে গেলে  নামিয়ে নিন।
সিন্ধি বিরিয়ানি
যা লাগবে : বাসমতি চাল আধা কেজি, ঘি এক কাপ, খাসির মাংস এক কেজি, পেঁয়াজ মিহি কুচি ৪টা, গরম মশলা ৪-৫ টুকরা করে, টকদই এক কাপ, আলু ৪টা, শাহাজিরা এক টেবিল চামচ, আদা-রসুন পেস্ট ২ টেবিল চামচ, হলুদ ২ চা চামচ, টমেটো কিউব এক কাপ, লেবুর রস আধা কাপ, বড় এলাচ, কাঁচামরিচ, পুদিনাপাতা, বাদাম, বেরেস্তা।
যেভাবে করবেন : চাল ধুয়ে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। হাঁড়ির পানিতে দু-এক টুকরা গরম মশলা দিয়ে ফুটিয়ে সেই পানিতে প্রথমে ভাত পরে অন্য হাঁড়িতে সব উপকরণ দিয়ে মাংস রান্না করে নিন। এবার আলু সিদ্ধ করে ঘিয়ে ভেজে নিন। রান্না করা ভাত ঘি মাখিয়ে ভাত, আলু মাংসের লেয়ার করে হাঁড়িতে দিয়ে ৫ মিনিট চুলায় দমে রাখুন। পুদিনাপাতার কুচি, বাদাম, বেরেস্তা ও কাঁচামরিচ ছড়িয়ে দিন।
বুন্দিয়া পোলাও
যা লাগবে : বাসমতি চাল এক কেজি, বিফ কিমা এক কাপ, ব্রেড ক্রাস, ডিম একটা, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, তেল এক কাপ, ঘি আধা কাপ, দুধ এক কাপ, পানি, লবণ পরিমাণমতো, গরম মশলা ৪-৫ টুকরা, আদা-রসুন পেস্ট এক টেবিল চামচ।
যেভাবে করবেন : কিমা, আদা-রসুন ও লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে ছোট বল বানিয়ে ডিম ও ব্রেড ক্রাসে গড়িয়ে ডুবো তেলে লাল করে ভেজে তুলুন। পাত্রে ঘি গরম করে গরম মশলা, পেঁয়াজ কুচি ও চাল দিয়ে ভেজে পানি, দুধ ফুটে উঠলে ঢেকে দিয়ে মৃদু আঁচে রান্না করুন। চাল ফুটে উঠলে ঢাকনা তুলে কাঁচামরিচ, চিনি দিয়ে ৫ মিনিট দমে রাখুন। ভাজা কোপ্তা মিশিয়ে সার্ভিং ডিশে পরিবেশন করুন।
নবাবী বিফ বিরিয়ানি
যা লাগবে : বিফ ২ কেজি, পোলাওর চাল এক কেজি, পেঁয়াজ ৪-৫টি মিহি কুচি, পেঁয়াজ বাটা এক কাপ, ঘি এক কাপ, মাওয়া ২ টেবিল চামচ, গরম মশলা বাটা ২ চা চামচ, বিরিয়ানি মশলা এক টেবিল চামচ, বেরেস্তা, টকদই আধা কাপ, আলুবোখারা, গোলাপজল, কাঁচামরিচ, লবণ, পেঁয়াজ বাটা আধা কাপ।
যেভাবে করবেন : হাঁড়িতে ঘি গরম করে সব বাটা মশলা, টকদই দিয়ে মাংস রান্না করে (বিরিয়ানি মশলাসহ) নিন। এভাবে অপর হাঁড়িতে ঘিয়ে ডাল ভেজে মাংস ঢেলে ভালোমতো মিশিয়ে পানি দিয়ে নেড়ে বেশি আঁচে বলক তুলে গোলাপজল, মাওয়া দিয়ে নেড়ে মৃদু আঁচে ঢেকে রাখুন ৫ মিনিট। বাকি উপকরণ দিয়ে ঢেকে রেখে পরিবেশন করুন।
বিফ সিলজিং ডিশ
যা যা লাগবে : ১ কেজি হাড়ছাড়া গোসত, পেঁয়াজ কুচি, মরিচ গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা, জিরা বাটা, গোটা রসুন, ভিনেগার ১ টেবিল চামচ, টমেটো সস ১ টেবিল চামচ, গার্নিস করার জন্য গাজর, কাঁচামরিচ, লেটুস পাতা।
যেভাবে করবেন : মাংস কুচি কুচি করে কেটে নিয়ে একদম পানি ঝরিয়ে মাংসের জন্য রাখা সব মসলা দিয়ে মাংস মাখিয়ে নিন। এর সঙ্গে ভিনেগার ও টমেটো সস দিয়ে প্রেসার কুকারে চাপিয়ে দিন। মাংস হয়ে এলে নামানোর পাঁচ মিনিট আগে রসুনের কোয়াগুলো দিন। ৫ মিনিট পর নামিয়ে ফেলুন।
গাজর, কাঁচামরিচ, লেটুস পাতা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
আলু পরোটা
যা যা লাগবে : ৬টি পরোটার জন্য দুটো বড় আলু, ময়দা, তেল, লবণ, সামান্য চিনি।
যেভাবে করবেন : আলু সিদ্ধ করে খোসা ছড়িয়ে নিয়ে ময়দার সঙ্গে ø্যাস করে দিন ভালোভাবে। এর সঙ্গে সামান্য তেল, লবণ, চিনি, হালকা গরম পানি দিয়ে ময়ান করুন। এরপর পরোটা বানিয়ে ডুবো তেলে ভেজে নিন। হয়ে গেল আলু পরোটা। বিফ সিজলিং ও সাতকড়ার আচারের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
বাদামের রসে মিষ্টি
যা যা লাগবে : কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, কাঠবাদাম ২ টেবিল চামচ, কাজুবাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ, গুঁড়ো দুধ ২ কাপ, চিনি আধা কাপ, ছোট ছোট সাদা মিষ্টি ১ কাপ।
যেভাবে করবেন : আধা লিটার পানিতে দুধ গুলিয়ে চুলোয় দিন। দুধ ফুটে উঠলে চিনি দিন। একটু ঘন হয়ে এলে বাদাম বাটা দিয়ে নাড়-ন। আরও ঘন হয়ে এলে মিষ্টি দুধে ছেড়ে দিন। মাখা মাখা করে নামিয়ে ফেলুন।
পরিবেশনের আগে ডিশটি ফ্রিজে রেখে দিন। কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, কাঠবাদাম দিয়ে পরিবেশন করুন।

গুছিয়ে রাখুন ঘরবাড়ি

কাজী সানজিদা আফরিন

আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা; মুসলমানদের অন্যতম খুশির ঈদ। এই খুশির দিনে আÍীয়পরিজন সবাই মিলিত হয়; একজন আর একজনের বাড়িতে দেখা করতে আসে। তাই ঈদ এলেই ভালো ভালো খাবার রান্নার পাশাপাশি সবাই বাড়িঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সাজিয়েগুছিয়ে রাখে। কিভাবে আপনার ঘরবাড়ি গুছিয়ে রাখবেন রইল তার টিপস।
* সম্ভব হলে ঈদের জন্য নতুন ড্রেস কেনার পাশাপাশি বেড কভার, পাপোশ, পর্দা, টেবিল মেট, কুশন কভার কিনে রাখুন। নতুন কিনতে না পারলে ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই ঘরের পর্দা, কুশন, টেবিল মেট, বেড কভার, পাপোশ ধুয়ে শুকিয়ে ইস্ত্রি করে রাখুন। ঈদের আগের রাতে অথবা ঈদের দিন সকালে ঘরের পর্দা টানিয়ে বেড কভার বিছিয়ে রাখুন। কুশন কভার ভরে রাখুন বেডের সামনে, পাপোশ বিছিয়ে রাখুন ঘরের সামনে।
* ফুলঝাড়- দিয়ে সারা বাড়ি ঝেড়ে পরিচ্ছন্ন করে রাখুন। ঘরের আসবাব ঝেড়েমুছে ঘুরিয়ে সাজিয়ে রাখুন। ঈদের জন্য ঘরের আসবাবপত্র ঘুরিয়ে দিলে ঘরের মধ্যে একটু চেঞ্জ আসবে।
* সম্ভব হলে ঈদ উপলে কিনে ফেলুন একটা ডিনার সেট, যারা নতুন করে কিনতে পারছেন না তারা আগের ডিস শোকেস থেকে বের করে ধুয়েমুছে ডাইনিং রুমে টেবিলের কাছাকাছি রেখে দিন, যাতে অনেক মেহমানকে একসঙ্গে খাবার পরিবেশন করতে পারেন।
* ঘরের কার্পেট ভ্যাকুয়াম কিনার দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখুন। একটু পুরনো হলে কালার করতে দিতে পারেন, নতুনের মতো হয়ে যাবে।
* ঘরের ওয়ালমেটগুলো নামিয়ে কাপড় দিয়ে মুছে আবার সাজিয়ে রাখুন। সম্ভব হলে কিছু নতুন ওয়ালমেট নিজেই তৈরি করে অথবা কিনে সাজাতে পারেন।
* ঘরের ফ্যানগুলো প্রথমে শুকনো ও পরে ভিজে ন্যাকড়া দিয়ে মুছে পরিচ্ছন্ন করে রাখুন।
* বাগান থাকলে ভালোভাবে পরিষ্কার করে আগাছা নির্মূল করুন। টবের গাছগুলো আলাদাভাবে সাজিয়ে টবগুলো মুছে নতুন রঙ করে নিন; বাড়িতে আলাদা শোভা বৃদ্ধি পাবে।
* ঘরের বাল্বগুলো খুলে ভালো করে মুছে আবার লাগিয়ে রাখুন। ঈদ উপলে ড্রইংরুমে নতুন রঙিন আলোর বাল্ব লাগাতে পারেন।
* সোফার ফোম, কুশন রোদে শুকিয়ে ভালোভাবে পরিচ্ছন্ন করে রাখুন।
* শোকেস থেকে সব ডিস নামিয়ে পরিষ্কার করে আবার নতুনভাবে গুছিয়ে রাখুন, যাতে ঈদের দিন সবকিছুতেই একটা পরিবর্তন আসে।
* ফ্রিজ, ওভেন ভালোভাবে পরিষ্কার করে সাজিয়ে রাখুন। যাতে ঈদের দিন সবকিছু হাতের নাগালে পাওয়া যায়, তাড়াহুড়ো আর প্রেশারের মধ্যে থাকতে না হয়। খাবার বারবার চুলায় গরম না করে ওভেনে গরম করতে পারেন। ফ্রিজে ঠাণ্ডা পানি, পানীয়, পিঠা, পায়েশ আগেই তৈরি করে বাটিতে ভাগ করে সাজিয়ে রাখুন, যাতে একটার পর একটা বের করলেই একটা গ্র“পের সবাইকে সহজে পরিবেশন করা যায়।
* প্রতিটি বাথরুম ভালোভাবে পরিষ্কার করে এয়ার ফ্রেশনার দিয়ে রাখুন। বাথরুমে বেসিনের কাছে পরিচ্ছন্ন তোয়ালে রাখুন, যাতে ঈদের দিন অতিথিদের কোন রকম অসুবিধা না হয়।

গরু কেনার আগে

নুর মোহাম্মদ সরকার

কোরবানির গরুটা বড় হবে না ছোট, তা কিন্তু নির্ভর করে আপনার বাজেটের ওপর। এেেত্র লোক দেখানো প্রতিযোগিতায় না গিয়ে সাধ ও সাধ্যের মধ্যেই সমন্বয় রাখা উচিত। সাদা-কালো, লাল হরেক রঙের গরুর মেলা বসে হাটে। যে রঙের গরুই কেনেন না কেন, কেনার আগে অবশ্যই ভালোভাবে দেখে নিতে হবে। দেশী গরুর পাশাপাশি ভারতীয় ও নেপালি গরু হাটে আসে। পছন্দ আপনার ওপর নির্ভর করে। তবে ভারতীয় ও নেপালি গরুর তুলনায় দেশী গরুর গোসত অনেক বেশি ভালো হয়। ঈদুল আজহার আগে অনেকেই ওষুধের মাধ্যমে গরু মোটা করে থাকে। পশু কিনতে গেলে কি কি করা দরকার এমন প্রশ্নের উত্তরে কাপ্তান বাজারের কসাই রুবেল মিয়া জানান, প্রথমে হাতে অনেক সময় নিয়ে যেতে হবে। দাঁত দেখে গরুর বয়সটা আন্দাজ করা যায়। গরুর গায়ের লোম দেখে বোঝা যায়, গরুটা ঘরে পালা নাকি আমদানি করা। ঈদের দু’তিন দিন আগে গরু কিনা উত্তম। অনেকেই ঈদের আগের রাতে গরু কিনতে আসেন। এতে তাড়াহুড়া করে শিংভাঙা, কানকাটা, অসুস্থ ইত্যাদি খুঁতের গরু কেনেন। কোরবানি দেয়াটা যেহেতু আসল উদ্দেশ্য, তাই ত্র“টিহীন গরু কিনতে হবে। কারণ ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী ত্র“টিযুক্ত পশু কোরবানি দেয়া উচিত নয়।
গরুর হাটে গরু কেনার সময় দেখলেন গরু বেশ তাগড়া। কিন্তু বাড়িতে আনার পরই ঝিমাচ্ছে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে, খাবার-দাবার না খেয়ে মুখ দিয়ে অনবরত লালা ঝরছে। এরকম কোন লক্ষ্মণ দেখলে বুঝবেন, গরুটি অসুস্থ। সম্ভবত খুরারোগে আক্রান্ত। খুরারোগ ছোঁয়াছে। খুরারোগে আক্রান্ত গরুর পায়ের খুরে ঘা আর মুখ দিয়ে সব সময় লালা ঝরে। গরু কেনার সময় অবশ্যই গরুর পায়ের খুরা দেখে নেবেন। গরু কেনার সময় দেখতে হবে গরুটি চঞ্চল কিনা, ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারছে কি না। সুস্থ গরুর নাক-মুখ সব সময় ভেজা থাকবে। সাধারণত গরুর জ্বর বা অন্য কোন অসুখ হলে নাক ও মুখ শুকনো থাকে।
গরুর বুকের মাপের সঙ্গে দৈর্ঘ্য-প্রস্থের মাপ মিলিয়ে নিতে পারেন গরুর গোশতের পরিমাণ কত হবে। তবে এেেত্র গরু দেশী না বিদেশী, বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। কারণ শাহিওয়াল জাতের গরু আর হরিয়ানা গরু যেমন এক নয়, ঠিক তেমনি জারসি গরু আর আমাদের দেশী গরুর আকারে রয়েছে পার্থক্য।
গরুর হাটে গরুর চামড়া টানা
গরুর পিঠে আঙুল দিয়ে গুঁতো দেয়া, গরুর পিঠে দু’একটি হাতের চাপড় দেয়া প্রত্যেক ক্রেতার সাধারণ অভ্যাস। তবে গরুর কসাই কিন্তু অভ্যাসের বলে হাতের চাপড় দিয়ে সহজে বুঝে নেবে গরুটা কেমন, আপনি প্রয়োজনে তাদের সাহায্যও নিতে পারেন। তবে অবশ্যই গরুর ত্র“টিগুলোর প্রতি তীœ দৃষ্টি রাখতে হবে। কারণ ত্র“টিযুক্ত পশুর কারণে আপনার কোরবানি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
 

মেনে চলুন নিয়ম-কানুন

যারা নিয়মিত ব্যায়াম করে থাকেন, তারা প্রতি সেশনে ব্যায়ামের সময় ১৫ মিনিট বাড়িয়ে দিন। অতিরিক্ত পরিশ্রম শরীরের মেদ ঝরিয়ে ফেলবে।
একবারে বেশি না খেয়ে একটু ুধা রেখে খান। তারপর দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর আবার খান। বেশি ুধার্ত হয়ে খেলে বেশি খাওয়া হবে।
বারবার কিন্তু পোলাও কোরমা খাবেন না। অথবা বেশি গুরুপাক বা শাহি খাবার খাবেন না। যেমন সকালে যদি সাধারণ নাস্তা খান, দুপুরে রিচ ফুড খেলেন অল্প, বিকালে আবার কম খেলেন, যেমনÑ চা, বিস্কিট, ফল ইত্যাদি। রাতে কিন্তু কম খাবেন, যেমনÑ ভাতের বদলে রুটি, সবজি বা সবজির স্যুপ ও মাছ ইত্যাদি। এভাবে খাবারগুলো ব্যালেন্স করবেন।
তেলে ভাজা, বেশি তেল মশলা দিয়ে রান্না করা গুরুপাক খাবার, মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলুন, এতে বদহজম তো হবেই, রোজ রোজ খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
দাওয়াতে গেলে বেশি বেশি খাবেন না, একবার নিন, দুই বার নেবেন না। বেশি চাপাচাপি করলে ভদ্রভাবে না বলুন এবং ভাত জাতীয় খাবার কম খান। মিষ্টি খাবার না খেয়ে ফল খেতে পারেন। দাওয়াতে গেলে খাবার দিকে মনোযোগ না দিয়ে গল্প করা ও সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করার দিকে মনোযোগ দিন।
খাওয়ার পর টক দই খেলে ভালো হজম হয়, বোরহানিও হজমে সহায়ক।
লেবু চর্বি দূর করার জন্য খুবই ভালো কাজ করে। সকালে উঠে হালকা গরম পানিতে একটু লেবু চিপে খেলে সারাদিন সেটা আপনাকে চর্বি দূর করতে সাহায্য করবে।
লাগাতার দাওয়াত থাকলে যেই বেলা দাওয়াত থাকবে না সেই বেলা অন্য রকম খান। রুটি, সবজি বা সবজির স্যুপ, সালাদ, মাছ ইত্যাদি। এতে আপনার খাওয়া-দাওয়ার সমতা বজায় থাকবে, বদহজম হবে না।
দাওয়াত এ যাওয়ার আগে বাসা থেকে হালকা খাবার খেয়ে নিন, যেমনÑ ফল বা সালাদ, পানি। তাহলে আর বেশি খেতে ইচ্ছা করবে না
কৃত্রিম রঙ দেয়া খাবার না খাওয়াই ভালো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন